[nadia-murshidabad] - চেতনা না এলে সূর্যদের দেহ ভাসবেই
কলার ভেলায় পরিপাটি বিছানায় যেন শুয়ে আছে সে। ভেসে চলেছে। পাশে খাবার, মাথার কাছে হ্যারিকেন। খুঁটি দিয়ে টাঙানো মশারিও। বারো বছরের সূর্য রায়ের মৃতদেহ এ ভাবে ভাসতে ভাসতে বুধবার দুপুরে ঠেকেছিল চন্দননগর রানির ঘাটে। গত রবিবার সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছিল নদিয়ার কালীগঞ্জের কুলতলা ফরিদপুরের সূর্যর।
কেন সৎকার না-করে এ ভাবে কলার ভেলায় নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হল ওই বালকের দেহ, তার উত্তর খুঁজতে গেলে বেশ খানিকটা পিছিয়ে যেতে হবে। সময়টা মধ্যযুগ। মঙ্গলকাব্যে মজেছে বাংলা। চেনা লৌকিক দেবদেবী মঙ্গলকাব্যের হাত ধরে রাতারাতি কুলীন হয়ে উঠেছেন। প্রবল তাঁদের প্রতাপ। বিপুল ক্ষমতাবান সে সব দেবদেবী চটলে সর্বনাশ। ধনপতি কিংবা শ্রীমন্ত সওদাগরের মতো বিত্তবান বণিক এক মুহূর্তে ভিখারি হয়ে যান। আবার তাঁদের খুশি করতে পারলে কালনাগিনীর বিষে মৃত লখিন্দরও প্রাণ ফিরে পান। কবিকল্পনার মনসা, শীতলা, চণ্ডী, ধর্মঠাকুরকে ঘিরে ক্রমশ মানুষ মধ্যে বিশ্বাস জন্মাতে শুরু করে। মঙ্গলকাব্যে মৃত স্বামীর দেহ নিয়ে বেহুলার ঘোষণা, “আমার বচন শুন কেহ না করিও আন, শুনহ শ্বশুর সদাগর। নিশ্চয় কহিলাম দৃঢ় কলার মান্দাস গড়, জিয়াইব কান্ত লখিন্দর।” তার পর গাঙ্গুরের জলে ভেলায় মৃত স্বামীকে নিয়ে ভেসে পড়া এবং শেষ পর্যন্ত জীবিত ফিরিয়ে আনার কাহিনি নদীমাতৃক সর্পসঙ্কুল বাংলার ঘরে-ঘরে অমোঘ দৈব বিধান হয়ে উঠল। মনসার মাহাত্ম্যের ভরসায় ওঝা-গুনিনের দল ফুলে ফেঁপে উঠল। আর গঙ্গা-জলঙ্গি- ভৈরব-মাথাভাঙ্গা-চূর্ণীর বুকে সারি সারি ভাসতে লাগল কলার মান্দাস। মৃত লখিন্দরদের শব।...
এখানে সম্পূর্ণ সংবাদ পড়ুন— - http://v.duta.us/2JL2BAAA